বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭

হাজতবাস ~ ফ্যাতারু বজরা ঘোষ

কে য্যানো বলেচিল, বীরের মত ঢুকচি, রাজার মতো বেরুবো, শিবিয়াই কিচ্চুটি কত্তে পাব্বেনা। ... মানে জেলে যাচ্চে খোকারা! উহ, কি তড়পানি শালা। ভাবখান এই য্যানো যতীন দাস কি সুয্যসেন জেলে ঢুকচেন! ও: করেচিস তো চুরিচামারি, য্যানো বিটিশ পিটিয়েছে। শালা, রগড় দেকে ভালই লেগেচিল। তা ভাবলুম, দম যখন আচে, নাহ এ ছেলে ছিঁড়ে দেকাবে! ওমা...

"কপাল আমার বক্ত (মন্দ)
শক্ত দেকে ভাতার নিলাম
হাগে শুদু রক্ত"

তাল ছেঁড়ার খ্যামতা নাই বাল ধরে ঝুলোঝুলি। একন কেঁদেকেটে একশা। আরেক মাল, গাবদা বডি, তিনটে বাঘে খেয়েও শেস কত্তে পারবেনা। বাংলা শিনেমায় নাম ছিল ঢ্যাপোস মতান্তরে আলুসেদ্দ, সেও কাঁদচে। দিদি বাঁচাও, শুকিয়ে যাচ্চি।
জেলের ভাত, লপসী কি জিনিস সে কুনাল বুজে গ্যাচে। গাদাখানিক আই পিল খেয়ে সুইসাইড নাটক কত্তে গেচিল, পেট খালাস করে হেগে মুতে ছড়িয়ে মাট ময়দান। লোকে খিল্লি কচ্চে। একন দেকলাম বই লিকেচে... 'বোন্দিজীবন'। ওই কলেজ ইস্কোয়ারের কোনায় ফ্রিতে মুততে গিয়ে দেকি বোইমেলা হচ্চে, হিসুর লাইন বড় ছিল ভাবলাম এট্টু দেকি একানে কি হচ্চে! লাডূ ফাড্ডু যদি মাগনা মেলে। ওরে সাঁটি এযে বোইমেলা! তকনই দেকলাম তাক আলো করে কালচে মলাটের দুম্বা সাইজের বোই। বোন্দিজিবন। নীচে লেকা কুনাল ঘোস।
বিক্কিরি হতে দেকলুমনা তবে একজন বুদ্দিজিবি পাস থেকে আরেক ঝিংকু শিস্যাকে বললো কুনাল ঘোস অমুককে মনে কোরিয়ে দিচ্চে! আমি সুদোলাম কি নাম বললেন দাদা?
লোকটা অবজ্ঞা নিয়ে বল্লো গ্রামচি, গ্রামচি। নাম সুনেচেন?
হেভি ভেবড়ে গিয়ে বললাম ইয়ে সুনেচি বলে মনে পড়চেনা, পুরো নামটা যদি দাদা বলেন...
আন্তোনিও গ্রামচি।
'আনতো নিয়ে ঘামাচি?'
লোকটা আমায় আকাট চাষা ছাড়া কিচুই ভাবলেনি। হেব্বি দামি পাঞ্জাবি পরেচে অতচ বিড়ি খেতে খেতে চলে গ্যালো
:(
এদের শিগারেট কেনার পয়সা থাকেনা?

আমার জিবে এসব উচ্চারন আসেনা। সেই ভানু বাঁড়ুজ্জ্যে কে তার ভাগ্নে ন্যাপলা বলেচিল না 'মামী হচ্চেন জোয়ান অব আর্ক'
ভানু বললেন জোয়ানের আরক?
ভাগ্নে যত শোধরায়, মামা কন 'আমার কানে দুইটা একই সুনায়'
আম্মো তাই।

হচ্চিল জেলের কতা, কি টেনে ফেল্লুম!
আমিও এট্টা বই লিকবো। সবাই লিকচে, ছাপাচ্চে। নাম ফাটচে।
আমার বই এর নাম হবে হাজতজীবন
মানে জেলে যাইনি কিনা। হাজত অব্দি দৌড়, তাও পাঁচ আইন কেশে। (পাঁচ আইন যারা বুজবেননা তাদের জন্যে পেটি কেস বলচি) রাস্তায় বাংলার পাউচের দর করচিলুম পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। শালা চুল্লুওয়ালা ছিল গাচ হারামি। বলচে ওর মালের দাম বেসি কারন খেয়ে পটকে যাওয়ার চান্সো আচে। আর পটকালেই দু লাক। ক্যাস!
ব্যাস।

ফ্যামিলি দু লাক পাবে এই ভেবে কেউ বেসি দামে চোলাই কেনে? কে বোজাবে?
তবে পুলিশ বাটাম দেয়নি। সুদু বলেচিল ভদ্দোলোক বলে তো মনে হচ্চে ক্যানো খান?
বললাম দু লাক পাওয়ার ধান্দায়। সাব ইনিস্পেক্টার টা খেঁকুরে বুড়ো। সে সালা এমন জবাব পাবে ভাবেনি। ষাঁড়ের বিচির মতো চোকের মনি নিয়ে তাকালো তাপ্পর সোজা হাজতে পাটালো। দেকলাম পলেস্তারা খসা দেওয়ালে কত্ত কি লেকা। 'মালতি আই লাব ইউ' নেতাজি ফিরে এসো, সিবদাস ঘোস জিন্দাবাদ, ওসির মা কে..., হাবিলদার সন্তোষের বোনকে.... ছ্যা ছ্যা। তবে একজন কবিতা লিকেচে। বেস ভাল।

দারোগার ভুরু
চামেলির উরু
দুটোই মোটা,
ভিকিরির পেট
গরাদের গেট
দুটোই ছোটা।

রমনীর মন
আর কালা ধোন
দুইই পাওয়া দায়,
ভুঁইয়া মানোস
মেনে গ্যালো পোষ
অধীর চ্যাঁচায়।

চাম্পি না? টুকে এনেচি তাই।
এসব পড়ে বুজলাম। জেলে গেলেই ক্যানো লেকা পায়। হাগা পাওয়ার মত লেকা পায়। দেশি আমাসার মত হড়হড়িয়ে নামে, কবিতা, গান। এই কদিনের পালদা আর বাঁড়ুজ্যেদা কি কিচু নামালো? বই হয়ে বেরুলে পরবো। তারপর আমিও লিকবো। হাজতজীবন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন