মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০১৬

সাতশো কোটি টাকা জরিমানা ~ আশুতোষ ভট্টাচার্য্য

দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী কেজরিবালের ওপর কিছু জনতার ব্যাপক ক্ষার , কারো মতে মালটা বদ্ধ উন্মাদ,যখন যা মনে আসে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, পপুলার পলিটিক্স করে ইত্যাদি ইত্যাদি। সেই যে কিছুদিন আগে জোড় বিজোড় গাড়ি চালানোর বিধান দিলেন দিল্লীতে, সে পনেরো পনেরো তিরিশ দিন লোকের কি গুসসা হল, বহুত পরিশানি হল। পলুসন তো কিচ্ছু কম হল না বেকার বেকার মানুষের কষ্ট।
সম্প্রতি উনি নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ পরিষেবা দেয় যারা তারা কোন ব্রেকডাউন বা ফল্ট সারাই করতে নির্দিষ্ট সময়ের বেশী সময় নিলে গ্রাহককে পরের বিলে ছাড় বা ডিসকাউন্ট দিতে হবে। কি আবদার বলুন তো দেখি, এসব করলে তো ব্যাবসা লাটে উঠবে, লাভের গুড় পিঁপড়েতে খাবে।কিন্তু পরিষেবা দানকারী কোম্পানিই বা কি করে, মেনে তো নিতেই হবে। ব্যাবসা তো আর হিমালয়ে কি মরুভূমিতে করা সম্ভব নয়।

দু একদিন আগে আবার কামান দেগেছেন, এবার দিল্লীর কিছু বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। বেসরকারি হাসপাতাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে সরকার অনেক কম মুল্যে জমি দেয়, এটা সব রাজ্যেই পরিকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য করে আর সাথে সাথে কিছু শর্ত দিয়ে দেয় সরকার, যেমন হাসপাতালে ফিছু ফ্রি বেড রাখতে হবে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার জন্য কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিছু সিট অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল মানুষের পড়াশুনার জন্য। সে নিয়ম তো অনেক আছে তা আর মানে কে? ভাবুন এক পাঁচতারা হাসপাতালে বিশাল মন্ত্রী, নেতা,শিল্পপতির চিকিৎসা চলছে আর তার পাশাপাশি এক রিকশাওয়ালা বিনি পয়সায় একই চিকিৎসার সুযোগ নিচ্ছে, এটা হয় কখনো, কিংবা আপনার আমার ছেলেমেয়ের সাথে ডিপিএস এ পড়ছে আমার বাড়ির কাজের মেয়েটির ছেলে! মেনে নেওয়া যায়। এমনিতে ট্যাক্স দিয়ে দিয়ে আমাদের পকেট খালি তাপ্পর এইসব।

হঠাৎ কথা নেই বার্তা নেই পরশু সেই পাগল মুখ্যমন্ত্রী দিল্লীর পাঁচ বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে সাতশো কোটি টাকা জরিমানা করেছেন, এই টাকা জমা করতে হবে ৯ই জুলাইয়ের মধ্যে কারন জমি নেবার সর্ত অনুসারে তাঁদের দরিদ্র্য মানুষের জন্য যে সেবা বিনামূল্যে দেবার কথা ছিল টা তাঁরা দেন নি।এই তালিকায় আছে ফরটিস এস্করটস হার্ট ইন্সিটিউট, ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি (সাকেত), শান্তি মুকুন্দ হাসপাতাল, ধরমশিলা ক্যান্সার হাসপাতাল, পুষ্পবতী সিঙ্ঘানিয়া হাসপাতাল। 

বড়লোকের কোর্ট আছে তাই হাসপাতাল সকল আদালতে যাবে শুনালি হবে, রায় বেরোবে, তারপর সুপ্রিম কোর্ট ইত্যাদি ইত্যাদি। হয়তো প্রমান হবে ওই হাসপাতালগুলো নিয়ম মেনে দরিদ্র সেবা করেছেন ( দেখেছেন নাকি আপনারা এমন কাউকে)। 

তা এহেন মানুষকে লোকে ফাগল বলবে না তো কি করবে, মুখ্যমন্ত্রী তায় আবার রাজধানী শহরের অন্য কত কাজ থাকে যেমন ফ্লাইওভার বানানো, রাস্তা মেরামত করা,ফুলের গাছ লাগানো, হাসি হাসি মুখে নানা অনুষ্ঠানে ফিতে কাটা সেসব নয় পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর সার্টিফিকেট ভেরিফাই করতে, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ কোম্পানির যথেচ্ছাচারের মুখে লাগাম পরাতে।

তা কলকাতার বাইপাসের দুপাশ ধরে লাইন দিয়ে যে হাসপাতাল তাঁদেরকেও সরকার ন্যুনতম মুল্যে জমি টমি দিয়েছিল শুনেছি( সে অবশ্য বামফ্রন্ট আমলে) আর এসব শর্তও লেখা আছে তাতে। দান বাম কোন সরকার কিছু করেছে বলে শুনিনি। এএমআরআই তে আগুন লাগার ঘটনায় কারো শাস্তি হয়েছে বলে শুনিনি, অবশ্য দিদি বিমানবাবুর হাত ধরে বলেছিলেন সব্বার নাকি শাস্তি হবে!!

কেজরিবালের এই সব কাণ্ড কারখানা দেখে বিজেপি তো রেগে আগুন, এই সব টাকা সরকার নাকি বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যাবহার করবে তার পর ব্যাবসায়ীদের অধিকারে হস্তক্ষেপ, কি কাণ্ড।
আপনি কি বলেন?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন