শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৫

ধর্ম ~ ইমতিয়াজ প্যাভেল

ধর্ম তুমি কোথায় থাকো
চুল, ত্বক না গোঁফের তলে ?
সত্যি তুমি থাকছো কোথায়
টাক, টিকি না দুই বগলে ?
ধর্ম তোমার কোথায় নিবাস
বোরখায় না লাল সিঁদুরে ?
ধর্ম কাকে দিচ্ছো মদত
মৌলবি না জাত হিঁদুরে ?
ধর্ম তুমি থাকছ কোথায়
চুল দাড়ি না পৈতে গিঁটে ?
কোথায় তোমার আসল ঘাটি
মক্কায় না তারার পিঠে ?
ধর্ম তুমি কোথায় ঘোরো
বাবরিতে না রাম-দুয়ারে ?
ভাসছো নাকি শুনতে পেলাম
রাজনীতি আর ক্রোধ জোয়ারে।
ধর্ম তুমি তৃপ্ত কিসে,
কুরবানি না বলিদানে ?
কখন তুমি নাড়াও মাথা
আজান নাকি গীতার গানে ?
ধর্ম নাকি আড্ডা মারো
ব্লাডব্যাঙ্ক আর হোটেলগুলোয় ,
আড্ডা নাকি মারছ শুনি
কবরখানায় শ্মশান চুলোয় ;
ধর্ম তোমার ইচ্ছেটা কি
বিচ্ছেদ আর রক্তমাখা
স্রষ্টার সব সৃষ্টিকে কি
ধন্দ দিয়ে সরিয়ে রাখা ?

আবোলতাবোল ~ আশিস দাস

বেজায় গরম। গাছতলায় দিব্যি ছায়ার মধ্যে শুয়ে আছি, তবু বোঁটকা গন্ধে অস্থির। ঘাসের উপর নোংরা পুরনো গেরুয়া চাড্ডিটা পড়ে ছিল; ফেলে দেবার জন্য সেটা যেই তুলতে গেছি অমনি চাড্ডিটা বলল, 'হাম্বা'! কি আপদ! চাড্ডিটা খামোকা হাম্বা করে কেন?
চেয়ে দেখি চাড্ডি তো আর চাড্ডি নেই, দিব্যি মোটা সোটা সাদা ধপধপে একটা গরু শিং উঁচিয়ে আমার দিকে প্যাট প্যাট করে তাকিয়ে আছে আর মোবাইল থেকে স্ন্যাপডিল আন-ইনস্টল করছে।
আমি বললাম, 'কি মুশকিল! ছিল চাড্ডি, হয়ে গেল একটা গরু।'
অমনি গরুটা বলে উঠল, 'গরু নই গরু নই, আমি গোমাতা। তাছাড়া মুশকিল আবার কি? ছিল আমির খান আর শাহরুখ খান, হয়ে গেল ঘোর শয়তান দেশদ্রোহী; ছিল দাঙ্গার মুখ, হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রী। এতো হামেশাই হচ্ছে।'
আমি খানিক ভেবে বললাম, 'তাহলে এখন তোমায় কি বলে ডাকব? তুমি তো সত্যিকারের গরু, থুড়ি গোমাতা নও, আসলে তুমি হচ্ছ চাড্ডি।'
গরু বলল, 'গোমাতা বলতে পার, চাড্ডিও বলতে পার, অনুপম খেরও বলতে পার'। আমি বললাম, 'অনুপম খের কেন?'
শুনে গরুটা বলল, 'তাও জানোনা?' বলে এক চোখ বুজে ফ্যাচ ফ্যাচ করে বিশ্রী রকম হাসতে লাগল। আমি ভারী অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। মনে হল ওই অনুপম খেরের কথাটা নিশ্চয় আমার বোঝা উচিত ছিল। তাই থতমত খেয়ে তাড়াতাড়ি বলে ফেললাম, 'ও হ্যাঁ হ্যাঁ বুঝতে পেরেছি'।
গরুটা খুশি হয়ে বলল, 'হ্যাঁ, এতো বোঝাই যাচ্ছে- চাড্ডীর দ, খের-এর তালব্য শ, অনুপমের প, আর গোমাতার ম- হল দেশপ্রেমী। কেমন, হল তো?'
আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না, কিন্তু পাছে গরুটা আবার সেই রকম বিশ্রী করে হেসে ওঠে, তাই সঙ্গে সঙ্গে হুঁ হুঁ করে গেলাম। তারপর গরুটা খানিকক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বলে উঠল, 'এই দেশে বোঁটকা গন্ধ লাগে তো পাকিস্তান গেলেই পার'। আমি বললাম, 'বলা ভারী সহজ, কিন্তু বললেই তো আর যাওয়া যায়না?'
গরু বলল, 'কেন? সে আর মুশকিল কি?'
আমি বললাম, 'কি করে যেতে হয় তুমি জানো?'
গরু একগাল হেসে বলল, 'তা আর জানিনে, গুজরাত, ইনটলারেন্স, বিফ ব্যান, দাদরি- ব্যাস। সিধে রাস্তা, সওয়া একঘন্টার পথ, গেলেই হল'।
আমি বললাম, 'তাহলে রাস্তাটা আমায় বাতলে দিতে পার?'
শুনে গরুটা হঠাৎ কেমন গম্ভীর হয়ে গেল। তারপর মাথা নেড়ে বলল, 'উহুঁ, সে আমার কর্ম নয়। আমার মোদীকাকা যদি থাকত, ঠিক ঠিক বাতলে দিতে পারত'।
আমি বললাম, 'মোদীকাকা কে? তিনি থাকেন কোথায়?'
গরু বলল, ' মোদীকাকা আবার কোথায় থাকবে? প্লেনেই থাকে; তবে মাঝে মাঝে হিমালয়ের চূড়ায় বসে ধ্যান-ও করে '।
আমি বললাম, 'কোথায় তার সাথে দেখা হয়?'
গরু খুব জোরে জোরে শিং নেড়ে বলল, 'সেটি হচ্ছে না, সে হবার জো নেই'।
আমি বললাম, 'কি রকম?'
গরু বলল, 'সে কিরকম জানো? মনে কর তুমি যখন যাবে দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে, তখন তিনি থাকবেন ম্যাডিসন স্ক্যোয়ার। যদি ম্যাডিসন স্ক্যোয়ার যাও তাহলে শুনবে তিনি আছেন মারিয়ানা খাতের তলায়। আবার সেখানে গেলে দেখবে তিনি গেলেন আদানির প্রাইভেট জেটে। কিছুতেই দেখা হবার জো নেই'।
আমি বললাম, 'তাহলে তোমরা কি করে দেখা কর?'
গরু বলল, 'সে অনেক হাঙ্গামা। আগে হিসেব করে দেখতে হবে ক্যামেরা কোথায় নেই; তারপর হিসেব করে দেখতে হবে আডবানি আর অমিত শাহ এখন কোথায় থাকতে পারে; তারপর দেখতে হবে আদানি আর আম্বানি এখন কোথায় আছে।তারপর দেখতে হবে সেই হিসেব মত যখন সেখানে গিয়ে পৌঁছবে তখন মোদীকাকা কোথায় থাকবে। তারপর দেখতে হবে-'
আমি তাড়াতাড়ি বাধা দিয়ে বললাম, 'সে কিরকম হিসেব?'
গরু বলল, 'সে ভারী শক্ত। দেখবে কিরকম?' এই বলে সে একটা ত্রিশূল দিয়ে ঘাসের উপর একটা লম্বা আঁচড় কেটে বলল, 'এই মনে কর মোদীকাকা'। বলেই খানিকক্ষণ গম্ভীর হয়ে চুপ করে বসে রইল।
তারপর আবার ঠিক তেমনি একখানা আঁচড় কেটে বলল, 'এই মনে কর তুমি', বলে ঘাড় বেঁকিয়ে চুপ করে বসে রইল।
তারপর হঠাৎ আবার একটা আঁচড় কেটে বলল, 'এই মনে কর পহেলাজ নিহালনি'। এমনি করে খানিকক্ষণ কি ভাবে আর একটা করে লম্বা আঁচড় কাটে, আর বলে, 'এই মনে কর বিহার বিধানসভা' – 'এই মনে কর যশোদাবেন পাসপোর্ট অফিস যাচ্ছে' – 'এই মনে কর জেমস বন্ড চুমু খাচ্ছে, ও না না ওটা তো সেন্সরড-'
এইরকম শুনতে শুনতে শেষটায় আমার কেমন রাগ ধরে গেল। আমি বললাম, 'দুর ছাই কিসব আবোল তাবোল বকছে, একটুও ভালো লাগেনা'।
অমনি গরুটা শিং বাগিয়ে জোরে একটা ঢুঁ মেরে বলল, 'তুই বেটা নিশ্চয় পাকিস্তানি! দেশদ্রোহী কোথাকার, যা দেশ ছেড়ে বেরিয়ে যা'।

শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৫

মহাভারতের মর্মস্থল - সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়

মহাভারত? সেরেচে! চাটুজ্জ্যের পো তো আর কালী সিঙ্গী নয় যে বাংলায় মহাভারত লিখে সাড়া ফেলে দেবে। অথবা নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়িও নয় যে মহাভারতের অজানা সব গপ্প টপ্প শোনাবে। তার ওপর আমার বিদ্যেবুদ্ধির দৌড়ে, মহাভারত যদি লিখেও ফেলি, সেটা সাকুল্লে দেড় পাতাতেই শেষ হবে। তবুও মহাভারত ধরে কেন টানাটানি করছি তার কারনটা খুলে কই। ছোটোবেলায় স্কুলে পড়তে আমার বাবা একখানা অক্সফোর্ডের ম্যাপবই কিনে দিয়েছিলো বইমেলা থেকেআমার ভূগোলের বিদ্যে মন্দ নয়অন্ততঃ আমার নিজের হিসেবে আফ্রিকায় নেকড়ে বা চায়নার হায়নার মত আমার ভুগোল জ্ঞান, মন্দার বোসের সঙ্গে খানিকটা তুলনা করা যেতে পারে। তা সেই ম্যাপবই নিয়ে আমি খুব জমে গেলুম। আমাদের ছোটবেলায় অমন রঙচঙে বই খুব একটা বেশি ছিলোনা। প্রায়ই উলটে পালটে দেখতাম। এই করে করে মানচিত্র দেখাটা কেমন একটা নেশার মত দাঁড়িয়ে গেল। যা কিছুই পড়িনা কেন, ম্যাপবইতে সেই জায়গা খুঁজে বের করা চাই। তখন আমি বোধহয় ক্লাস সিক্স, নিজের চোখে বেশ ডেঁপো গোছের মিচকেঅন্যের চোখে হাবুলচাঁদ অবস্থাভেদে উল্টোটা। বই পত্র হাতের গোড়ায় যা পাই তাই পড়ি। খুব সম্ভবত শুকতারা পত্রিকায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কিত একটা লেখায় পেলাম ১৯৪১ সালে সোভিয়েত-জার্মান যুদ্ধের একেবারে শুরুতে ব্রেস্ত দুর্গের লড়াইয়ের কথা। সে লড়াই নিয়ে একখানা আস্ত লেখার ইচ্ছে রইলো, তাই এখানে ভ্যানতাড়া না করে সংক্ষেপে সারি। ম্যাপে দেখলাম ব্রেস্ত শহর সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেকটা ভেতরে। তাহলে লেখায় সীমান্ত শহর বলা হলো কেন? সমাধান পেলাম, ধুলো ভর্তি বইয়ের তাক ঘেঁটে বের করা ১৯৩৯ সালের আর একখানা অক্সফোর্ড অ্যাটলাস ম্যাপবইতে। একই বই। কিন্তু একি? দেশ গুলো সব অন্যরকম যে! সীমানাগুলো নতুন মানচিত্রে অনেকটা এদিক ওদিক সরে গেছে। ইয়োরোপের যুদ্ধের আগের মানচিত্র দেখে কেমন ঘোর লেগে গেল। কি মনে হলো, পাতা উলটে ভারতের মানচিত্র দেখতে গেলাম। গোলাপী রঙ দিয়ে ভারতের অবস্থান বোঝানো রয়েছে বইতে। আর সে ভারতবর্ষ পশ্চিমে কোহাট-বান্ন থেকে পূবে আরাকান পর্য্যন্ত বিস্তৃত। নতুন মানচিত্রে দেখলাম সেই ভূভাগের পূবদিকের নাম বাংলাদেশ, পশ্চিমদিকের নাম পাকিস্তান আর বাকিটুকু ? মনে মনে নাম দিয়েছিলাম বাকিস্থান।

মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৫

চা বাগানের "ওরা " ~ অবিন দত্তগুপ্ত

শীতের সকালে , ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চায়ে চুমুক না দিলে , ঠিক দিন শুরু হয় না । কি বলেন ? আমার তো হয়ই না । দার্জিলিং চা হলে তো কথাই নেই , গন্ধই আলাদা ।ডুয়ার্স বেড়াতে গিয়ে বীরপাড়া চা বাগানে , অস্তগামি সূর্যের রাঙা আলোয় তোলা সেল্ফি মনে আছে ? আর আশেপাশের লোকগুলো ? সকাল সকাল সেজে গুজে ,খোপায় ফুল লাগিয়ে , মলিন শাড়ী পরে যারা চা পাতা তুলতে যেতো ? জানি মনে আছে । মনে করে দেখুন , ওদের সাথে দাঁড়িয়ে , ওদের মতো করে আপনি চা পাতা তুলেছিলেন (ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ...মিষ্টি হেসে ) , গুনে গুনে দুটো । একটা প্রোফাইল অন্যটা কভার । ডুয়ার্সের মমতাশঙ্কর বা দীপঙ্কর দে তো তখন আপনি । মনে পড়ে ?
যেটা মনে পড়ে না ,সেটা মনে পড়িয়ে দিতেই এই গৌরচন্দ্রিকা ।আপনার মনে পড়ে না,যারা চা শ্রমিক ,তাদের দিন মজুরি ঠিক কতো ? খুব কম , ওদের মাসের টাকায় , আপনার দিন গুজরান । আপনার মনে পড়ে কি , ওদের মজুরি বাড়ানোর দাবিতে , বছর খানেক আগে , সমস্ত চা বাগানের "ওরা " , আপনার আমার শহরের উদ্যেশ্যে লং মার্চ করেছিল ? হাঁপ ছাড়ুন , ওরা পৌছাতে পারেনি । যাদের হারানোর কিস্যু নাই , তারা রাজপথে হানা দিলে রাজধানীর কি ভয়ংকর অবস্থা হয় ,তা তো আপনারা নবান্ন অভিযানে দেখেছিলেন । চাষি -খেতমজুররা দেখিয়েছিল । দায়িত্ব নিয়ে বলছি ,ওটা ট্রেলার ছিল । চা বাগানের শ্রমিকরা পৌঁছালে পুরো সিনেমাটা দেখতে পেতেন । যাই হোক , চা শ্রমিকদের মাইনে কিছুটা বাড়ে , এবং ওরা সে যাত্রা , শহরকে রেহাই দেয় । যাদের কিচ্ছু নাই , কিছুটা জিতে নেওয়াও তাদের কাছে বিশাল জিত । শ্রমিক ইউনিয়ানগুলির যৌথ লড়াইতে , ওরা একটা লড়াই জিতেছিল । যুদ্ধ কিন্তু তখনো চলছে ।
তারপর আচ্ছেদিনের আগমনের সাথে সাথে , জিনিসপত্রের দাম বাড়ল । মজুরি আর বাড়ল না , যে যৎসামান্য রেশন পেয়ে ওদের বাচ্চারা বুড়োরা দুর্ধর্ষ ভাবে বেঁচে থাকত সেটা বন্ধ হয়ে গেল । অনাহারে প্রথম যে চা শ্রমিক মারা গেলেন , তার নাম আপনার মনে নেই । মালবাজারে মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ,আইফোন হাতে পোজ দিয়ে ফটো তুলেছিলেন । অসামান্য সেই ছবি আপনার মনে আছে । কিন্তু মনে নেই , যে ওই জায়গার থেকে মাত্র ২০-৩০ কিলোমিটার দূরে না খেয়ে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে একের পর এক মানুষ । মুখ্যমন্ত্রী জানতেন , উনি যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি । মিডিয়া বুম-ও ওনাকে ছাড়ার প্রয়োজন বোধ করেন নি । অতএব আপনার মনে রাখাকে আর দোষ দি কী করে বলুন ?
মনে রাখবেন , আজকে নিয়ে গত এক মাসে , ২৯ জন চাশ্রমিক অনাহারে মারা গেছেন । একমাত্র সি আই টি ইউ ছাড়া কেউ পাশে দাড়ায়নি । মনে রাখবেন তো বললাম , কিন্তু জানি মানুষ লেখার থেকে ছবি মনে রাখে বেশী । বীভৎস ছবি , অনাহার ক্লিষ্ট মানুষের ছবি , মানুষ মনে রাখে , বহুদিন পরে রমান্টিসাইজ করে । তাই আপনাদের ছবি দিচ্ছি । অনাহারে মাটির সাথে মিশে যাওয়া মানুষের ছবি দিচ্ছি । দেখুন , মনে রাখুন , আর প্রার্থনা করুণ মরলে যেন এরা সবাই মরে । কারণ একটা প্রজন্ম বেঁচে গেলেও , তাদের সামনে আপনাকে আমাকে জবাবদীহি করতে হবে । দেখুন ,
পুনশ্চ : আপনার পাড়ার ক্লাবে ২ লক্ষ টাকা ঢুকেছে ,আশা রাখি । 



 
 

সিনেমার নামঃ- দেওয়া-নেওয়া বা প্রেমপূজারী ~ অনামিকা

​হাপ্প্যান্ট কেঁদে বলে, প্রিয়তম তিনো
গলাগলি ভাব ছিল এই সেই দিনও।
কালিঘাট টালিঘরে নিয়ে দলবল
মাসিমা মালপো খামু, বলেছে অটল।
তারপরে যা ঘটল, কী যে বলি আর,
আমি সেন্ট্রালে, আর তুই সেকুলার।



তিনো বলে হাপ্প্যান্ট, তবে বলি শোনো,
নিজের ধান্দা ছাড়া চলিনি কখনও।
তবুও আশায় থাকি। ভুলে যাস তোরা
নরেনকে পাঠিয়েছি গোলাপের তোড়া।
তোদেরই তো ঘাড়ে চেপে রেলে কয়লায়
করেছি দেদার চুরি… মন যত চায়।
ট্রাপিজের এ' খেলায় ঠিক দড়ি ছুঁয়ে
পৌঁছে গিয়েছি সোজা 'ইউপিএ টু'এ
তারপর মাও-খাও-সারদার তেজে
পেয়ে গেছি নবান্ন। ইতিহাস সে' যে।
কেজরি ও লালুভুলু আরও কত শত
রয়েছে চেয়ার-লোভী ঠিক আমার মত।
গ্রুপ ফটো তোলা হল সে'গুলোর সাথে।
দেখিস পিএম হবো, নেক্সট চান্সটাতে।


হাপ্প্যান্ট কয়, কেস সোজা নয় ভাই
তোর সারদার পিছে মোর সিবিআই।
চেন বাঁধা সে কুকুর হাঁকে ডাকে জোরে
বললেই খ্যাঁক করে কামড়াবে তোরে।
তিনো বলে বৃথা কেন এত খ্যাঁচখ্যাঁচ
সোজা ও সরল এই গট আপের ম্যাচ।
উপরে কুস্তি আর তলে তলে প্রেম।
কী করবে নীতিহীন গাধা ছিপিয়েম?
তোর আছে গরুপূজা। বিপরীতে আমি
অভিনয়ে করে যাই সেকু-ভণ্ডামি।
এই ভাবে দুই স্থায়ী প্রেমিক প্রেমিকা
ভাগ যোগ হিংসার নিয়ে নিল ঠিকা।

বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৫

ভালবাসলে ঠিকই মরে যেত একদিন - শুভাশিষ আচার্য্য

ভালবাসলে ঠিকই মরে যেত একদিন
মায়ার এই সংসারকে বলে দিত বাই।
এখন খুব চিন্তা হয় কি হবে?  কি বলে
কাগজ দেখি? টিভি  খোলোতো ! হ্যাঁ হ্যাঁ এটা চাই......  
হত্যা দেখি টি আর পিতে  তুঙ্গভদ্রা,    
ঝালমুড়ির মতন দেখি খুন করা গুলো,
টাইম-পাস,জনচেতনা,বাইট বিলাস-
সব ত হল! সব ত হবে ! ওরা কি বলল?

“বস, মেরেছি। খুন হয়েছে একগুঁয়েটার,
রাতটা গেলে সব মিলিয়ে খান পঁচিশেক.
কিন্তু গুরু কি কিচাইন রক্ত কোথায়?
যতই মারি, চাক্কু, ছুরি, আগুন বেরোয়
নলি কাটলে মাথা কাটলে আগুন বেরোয়
দেশটারে না জাগায়ে দ্যায় অ্যাত্ত আলো...”

ভালবাসলে ঠিকই মরে যেত একদিন
মায়ার এই সংসারকে বলে দিত বাই।
হত্যা করা হয়েছে তাই আলোর উৎস
মরে যাবার আর কোনই পথ খোলা নাই।