শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৫

আমোদিনীর হালকা পালক ~ সংগীতা দাশগুপ্তরায়

আমার বড়মাসি ছিল তুমুল সুন্দরী। যাকে বলে ফাটাফাটি সুচিত্রা সেন টাইপ সুন্দরী। তখন ওটাই সৌন্দর্যের মাপকাঠি হিসেবে নাকি ধরা হত। তো মাসিমনি জামালপুরের সুচিত্রা সেন হয়ে বহু উত্তম মধ্যম ও অধমের বুকে দোলা লাগিয়ে চলেছে নিয়মিত। হেনকালে আমার বড়মামুর প্রাণের বন্ধু ভীমমামু মাসিমণির প্রেমে পড়ে একদম হাপুস হুপুস দশা । মুশকিল একটাই যে বন্ধুর বোনকে এভাবে ভাল লাগাটা ঘোরতর নিয়মবিরুদ্ধ। এদিকে বেচারা যত ভাবে ভুলে যাবে 'মনো মানে না' । শেষে মরিয়া হয়ে আগে বড়মামুর কাছেই কনফেস করল। বড়মামুর শুনে আপত্তি নেই কারন বন্ধুটিও বদ্যি (এটা একটা মারাত্মক ক্রাইটেরিয়া) এবং ভারি পরোপকারী ভালমানুষ ধরনের। হালত দেখে বড়মামুই হাল ধরল। মাসিমণিকে একদিন কথায় কথায় বলল "বুঝলি, ভীমের তোকে খুব পছন্দ" ।
মাসিমণি সুচিত্রাচিতো বিরক্তি দেখিয়ে বলল "কী যে বল বড়দা! ঐ তো নামের ছিরি! ভাবো তো, বিয়ের কার্ডে শ্রীমতি সুচিত্রা সেনের সঙ্গে ভীম গুপ্তর বিয়ে হচ্ছে লেখা হবে! আমি তো ভাবতেই পারিনা!"
বড়মামু ভীমমামুকে গিয়ে হুবহু মাসিমনির কথাই কপি পেস্ট করে দিয়েছে। তারপর শুরু হল "প্যার হামে কিস মোড় পে লে আয়া" অবস্থা। ভীমমামু জামালপুর কোর্টে গিয়ে নাম এফিডেভিট করে অমিয় গুপ্ত করে ফেলল এক সপ্তাহের মধ্যে। তারপর জনে জনে ডেকে ডেকে বা কেউ ডাকলে তাকে শুধরে দিয়ে বলা "আমাকে ভীম বলবেন না। অমিয় বলে ডাকবেন। আমি নাম পালটে নিয়েছি"।
বন্ধুর প্রেম দেখে বড়মামুও অভিভূত। দুদিন পরে ভীম আকা অমিয়মামু সাইকেল নিয়ে বাড়ির উঠোনে এসে ঢুকেছে। মাসিমণি কাচা শাড়ি জামাকাপড় মেলতে মেলতে উঁকি দিয়ে দেখে ভিতরবাড়ির দিকে তাকিয়ে হাঁক দিল "বড়দাআআআআআআআআ, বাইরে এসো একটুউউউউ। ভীম কাটা অমিয়দা এসেছে এ এ এ এ" ।
ভীমমামু যে আমার বড়মেসো হয়নি সে নিশ্চই আর বলে দিতে হবে না। এখন আমার চিন্তা যে আমি কবে কল্যাণী কাটা সমৃদ্ধি আর গড়িয়া কাটা উত্তমসিটি যাব...
দুর্গাপুর কাটা অগ্নিবীনায় যাবনা কারন ইটস্‌ ঠ্যু হঠ...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন