সোমবার, ৩১ মে, ২০১০

আমি বুদ্ধিজীবি ... ~ অনামিকা


সভ্যতার শুরু থেকে আমি আছি ... আমি বুদ্ধিজীবি।
শিখিনি হাতের কাজ। মেধা আছে, মিডিয়া পৃথিবী
"বিদ্বজন" বলে ডাকে! তালি দেয়, "সাবাস! সাবাস!"
বুদ্ধিহীন "জনগণ", তোরা ঘাম ... তোরা ক্রীতদাস।
তোদের দুঃখে রাতে ঘুমোইনা ... দিনে সোমরস!
ন্যাকামির পরীক্ষায় আমি ফার্ষ্ট, আমি দশে দশ।

আমি ছবি ... কথা ... গান, আমি মঞ্চ ... আমি হেরিটেজ!
ক্ষমতার এঁটো কাঁটা সবই খাই ... ভেজ ননভেজ।

আমি ব্রাত্য, আমি শাঁওলি, আমি জয় , কৌশিক, সমীর।
ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া শুভা, আমি ঝানু দালাল জমির!
"মা"কে বিক্রি করতে পারি। আকাশের বৃষ্টি পশলাকে ...
তাও বেচে দিতে পারি কমবেশি পাঁচ ... দশ লাখে!
মানুষ মরলে আমি "মানবতা"ধ্বজাধারী ... চুপ!
রক্তমাখা ভদ্রখুনি, সন্ত্রাসের দিই নাট্যরূপ।

রাজার হুকুমে চলি! তাই আমি সেরা সভাসদ।
আমি গাধা ... সুরে সাধা! আমি জানি, আমি অতি বদ!

শনিবার, ২৯ মে, ২০১০

ছিঃ ... মৃতভোজী বিদ্বজন ... ছিঃ ... ~ অনামিকা

 


প্রত্যেকদিন খুন করে যায় "জনগনের আদালত"
"মরছে সিপিএম-এর দালাল", তোদের মুখে বাঁধা গত!

রেলকামরা তুবড়ে গিয়ে মরল যখন দুইশ' জন,
রাজনৈতিক প্রচার করতে, প্রেসক্লাবে যাস তুই স্বজন!
মাসান্তে পাস কাঁড়ি মাইনে, বিপদ এলে গুটোস লেজ ...
বুক ফাটানো কান্না শুনিস? না না ... তোরা তো হেরিটেজ!

পাড়ায় পাড়ায় খুঁজছে সবাই, ওই খুনিদের বন্ধু কে?
কারা যোগায় সংস্কৃতিময় বারুদ ওদের বন্দুকে?
শশধরের সাথে মিটিং ... ব্যাপারটা খুব রোমান্টিক ...
সুশীলরা যে আদৌ মানুষ, এইবারে তার প্রমান দিক!

ক্ষমতালোভী শিলাদিদিকে এবার তোরা বোঝা না ...
বাঘের পিঠে চড়া সহজ। কিন্তু নামা? সোজা না!

মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০১০

বিষ তাহার ... ইস্তাহার ~ অনামিকা

আমাকে জেতাবি! আমি জিতলেই কলকাতা হবে লন্ডন।
করকোষ্ঠির বাম গ্রহরেখা সব হয়ে যাবে খণ্ডন।

আমাকে জেতালে সাজিয়ে তুলব পচা নিমতলা ঘাট।
তোদের মারব ... যত্নে পোড়াব ...। ফ্রি তে চন্দন কাঠ।

জলকর? ছি! ছি! উথলে উঠবে রক্তজলের ফোয়ারা।
আমাকে জেতালে কলকাতাটাকে করব দান্তেওয়ারা!

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধবে, আমাকে না যদি জেতাস।
ন্যায় অন্যায়? দরকার হলে, এখুনি খেলব সে তাস!

আমি উসকানি। আমি জাতপাত। কলকাতা মেরি জান!
আমি ইফতার। আমিই মতুয়া। আমি প্রচণ্ড ভান।

হবেই জিততে। কারুর চিত্তে শান্তি দেব না কোনও।
আমি না জিতলে রাস্তা কাটব ... অবরোধ ঘন ঘন!

আগুন লাগাবে দামাল ছেলেরা। কাউকে দেবনা রক্ষে!
বড় সুখ প্রাণে। মাওবাদীরাও আছেন মিত্রপক্ষে।

নগদ মূল্যে কিনেছি শাঁওলি ... ব্রাত্য ... মহাশ্বেতা!
জিতব, কারণ "জিততে জানলে" তবেই তো যায় জেতা!

 

সোমবার, ১৭ মে, ২০১০

জবাবদিহি ~ অনামিকা

ওরা নয় তত যুক্তিনিষ্ঠ ...
তাইতো পায়ের তলায় পিষ্ট!
আদৌ মরতে হত কি ওদের,
ট্রেনে না চাপত যদি?
ছোট মুখে বড় করিস তর্ক।
জনগণ কেন নয় সতর্ক?
ট্রেন ছেড়ে যাবে ... যাকনা বাছারা ...
মন্ত্রীর থাক গদী!

মরে গেল যারা অকৃতজ্ঞ।
পণ্ড করতে চাইছে যজ্ঞ।
ট্রেন প্ল্যাটফর্ম পালটানো মানে ...
"পরিবর্তন" সেটাও!
যারা সোজা কথা বুঝতে চায়না,
তারা সিপিএম, নোংরা হায়না,
মৃত্যু ওদের সঠিক প্রাপ্য ...
সেই পাওনাটি মেটাও।

রেলের যাত্রী, তোদের জন্য
কমিটির মাথা শুভাপ্রসন্ন!
স্বর্গযাত্রা ভরপুর হোক ...
সুখে আর স্বাচ্ছন্দে!
অর্ধলক্ষ মাসের মাইনে,
উঁহু ... কোনও কথা শুনতে চাইনে
তোরাও তো পাবি ওই টাকাটাই ...
মরলে ... পরমানন্দে!

পরিবর্তন চাইছি আমরা।
রঙ পালটাল রেলের কামরা ...
শেষ মুহূর্তে প্ল্যাটফর্মেরও
বদল ঘটতে পারে।
সবাই বলছে ... "প্রিয় মমতাজী
তুমি চাইলেই প্রাণ দিতে রাজি"!
একটা বা দুটো মৃত্যুতে তাই
লজ্জা লাগছে না রে!

বৃহস্পতিবার, ১৩ মে, ২০১০

পৌরভোটের অ্যাজেন্ডা ~ দুর্জয়

'আবারো এসে গেছে। মিউনিসিপ্যালিটি/কর্পোরেশন নির্বাচন। ২০১০। এক পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্যে নির্বাচন। যে সময়ে দাঁড়িয়ে এক অলীক পরিবর্তনের স্বপ্ন বিক্রি করছে এক মহাজোট। কি বললেন? জোট ভেঙ্গে গেছে? তৃণমূল একা লড়ছে? নাহ! ভুল বললেন। জোট আছে। এবং আক্ষরিক অর্থেই মহাজোট আছে, যে জোটে সামিল ধান্দাবাজ বুদ্ধিজীবি থেকে শুরু করে কংগ্রেসের হাত ধরে বড় বড় আমেরিকান কোম্পানীগুলো অবধি। এই রে! নিশ্চয়ই ভাবছেন, পুরসভা ভোটে আবার আমেরিকা কেন? সিপিএম গুলোর কি আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই? আছে দাদা, আছে। কিন্তু আমাদের কাজের থেকেও আরও আরও বেশী করে যারা আছে, তাদের অস্বীকার করি কি করে? কি করে ভুলি, টিভি চ্যানেলে কংগ্রেস নেতা নির্বেদ রায়ের সদম্ভ ঘোষনা, যে ২০০৮ এ পরমানু চুক্তির মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বামফ্রন্ট ইউপিএর থেকে সমর্থন উঠিয়ে নেবার পরে কংগ্রেস 'ন্যাশনাল অ্যাজেন্ডা' নিয়েছে, যে সিপিএম কে উচ্ছেদ করতে হবে, এবং তার জন্য সম্ভাব্য-অসম্ভাব্য কোনও পদ্ধতিই তারা বাদ দেবে না। কি করে ভুলি, আমেরিকার জিই, ওয়েস্টিংহাউসের মত সংস্থার পরমানু চুল্লী বানানোর পরে তাতে দুর্ঘটনা ঘটলে যে ক্ষতিপুরন দেবার কথা, তা যথাসাধ্য কম করে দেশের কোষাগারের টাকা বিদেশী কোম্পানীর মুনাফায় পরিনত করার জন্য সংসদে কংগ্রেসের মরিয়া চেষ্টা, এবং তার বিরুদ্ধে বামফ্রন্টের মরিয়া লড়াই? সিপিএম টিকে থাকলে যাদের ক্ষতি, তাঁরা এবারেও মরিয়া, যেমন ছিলেন পঞ্চায়েত ভোটে, যেমন ছিলেন লোকসভা ভোটে, যেমন আছেন পৌরসভা ভোটে। আর যে কারনেই, সচেতন ভাবে, টিভি চ্যানেল থেকে সংবাদপত্রের পাতায় রোজই গুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, একটা পৌরভোটের কি অ্যাজেন্ডা।

পৌরসভা কি করে? পুলিশ প্রশাসন কে নির্দেশ দেয়? চোর ধরে? ডাকাত মারে? নাকি জমি অধিগ্রহন করে? কিছুই করে না। যেটা করে, সেটা হল, নাগরিক জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি দেয়। রাস্তা, জল, জঞ্জাল সাফাই, নাগরিক সৌন্দর্যায়ন ইত্যাদি কাজ। লোডশেডিং পৌরসভা করে? না করে না। লোডশেডিং কেন হচ্ছে, সেটা অন্য প্রশ্ন, সে প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। আপাতত ভাবা যাক, বিরোধীদের মুখে যে দাবিগুলো উড়ে বেড়াচ্ছে, সেগুলো কেন মোটেই পৌরসভার সাথে কোনওভাবেই যুক্ত নয়। এর একটাই ব্যাখ্যা হতে পারে, এবং সেটিই সত্যি। বামফ্রন্টের পরিচালিত পুরবোর্ডগুলো কাজ করেছে। যে যে কাজ গুলো তাদের করার কথা ছিলো, সেই সেই কাজগুলো তারা সাফল্যের সাথেই করেছে। অতএব, সেগুলো নিয়ে কিছু বলার নেই, আর তাই, পুরভোটের অ্যজেন্ডা সাঁইবাড়ি, নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, রাজ্যে সিপিএমের সন্ত্রাস। সিপিএমের সন্ত্রাস টা কি রকমের তা জানতে গেলে একটা তথ্যই যথেষ্ট, যে গত লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে, এক বছরে, শুধু মাত্র জঙ্গলমহলেই তৃণমুলী-মাওবাদীদের হাতে খুন হয়েছেন ২১০ জন সিপিএম কর্মী।

শ্যামবাজারের নির্বাচনী সভায় তৃণনেত্রী ঘোষনা করলেন, পুরভোটে তাঁরা জিতলে তিন মাসের মধ্যেই বিধানসভা ভোট করে দেবেন! কি মানে দাঁড়ালো? সাংবিধানিক সঙ্কট ছাড়া নির্বাচিত সরকার ভেঙ্গে দেওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি, মুলায়ম সিঙ্ঘ কেন্দ্রীয় সরকারে যোগ দেবার বাসনা প্রকাশ করার পরে, সরকার কে বিভিন্ন ভাবে বিপাকে ফেলা মমতার চোখরাঙ্গানিকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা সোনিয়া গান্ধীর হাতের মুঠোয়। এমতাবস্থায়, সাধের জোট ভেঙ্গে দেওয়া মহিলার অবাস্তব বায়নাক্কা প্রণব মনমোহন মেনে নেবেন, এমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। হাতে থাকে একটিই মাত্র উপায়, সেটা হলো দায়িত্ব নিয়ে সাংবিধানিক সংকট তৈরি করা। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, যে পৌরসভা নির্বাচনের পরে পশ্চিমবঙ্গে নৈরাজ্যকে সর্বকালীন সেরা উচ্চতায় নিয়ে যাবার পরিকল্পনা করছেন মমতা, শ্যামবাজারের ঘোষনা যে পরিকল্পনার সামান্য প্রকাশ মাত্র। এবং সে কাজে যে তৃণমুল রীতি মত দক্ষ, সে কথা বুঝতে গেলে সিপিএম হতে হয় না। গত কয়েকমাসে রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য তৈরি করে তৃণমুল প্রমান করেছে, ক্ষমতায় এলে তারা '৭২-'৭৭ এর কংগ্রেস কে ছাপিয়ে যাবে। সন্ত্রাস তৈরি করাই তাদের অন্যতম লক্ষ্য।

অন্যতম বললাম কেন? কারন, অন্যতর লক্ষ্যও আছে বইকি। তৃণমুল সাংসদ কবির সুমনের বক্তব্য শুনলেই তা জলবৎ তরলং হবে। কি বলেছেন সুমন? "খাও খাও খাও... শুধু খাওয়া আর খাওয়া" দক্ষিণ ২৪ পরগণায় আর পুর্ব মেদিণিপুরে সরকারী টাকার লুঠ চলছে, তৃণমুলের নেতা থেকে কর্মী, সব্বাই সরকারী টাকা লুটে যাচ্ছেন। লুটপাট আর হিস্যার সঙ্ঘাতে একের পর এক পঞ্চায়েতে, সমিতিতে আনা হচ্ছে অনাস্থা, যে হিস্যা কম পাচ্ছে, সে লোক জন জোগাড় করে অনাস্থা ডেকে দিচ্ছে অন্যের বিরুদ্ধে। আইলার ত্রান শিকেয় উঠেছে, অশান্ত নন্দীগ্রাম এখনও অশান্ত, লুটের টাকার বখরা নিয়ে তৃণমুলের মারামারিতে প্রশাসনিক বন্দোবস্ত শিকেয় উঠেছে, এক গোষ্ঠি মাওবাদীদের সুপারি দিয়ে খুন করে দিয়েছে আরেক গোষ্ঠীর মাথা নিশিকান্ত মন্ডল কে। হাবড়ায় রক্তদান শিবিরে বোমা মেরে কংগ্রেস কর্মী বাপি চৌধুরীকে খুন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতি-মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সাট্টা-ডন তৃণমুল কর্মী। বৈদিক ভিলেজে জমি ডাকাতি করে বুড়ো আঙ্গুল ফুলিয়েছে তৃণমুল বিধায়কের ভাই, তারপরে খুন খারাপি করে বেপাত্তা হয়েছে সে। চলছে লুঠ। নেত্রী নিজের মন্ত্রক কে লুটে যাচ্ছেন এমন ভাবে, যেন, 'কাল' বলে কিছু নেই, যা লোটার আজই লুটে নাও। রেলের টাকা লুটে যাচ্ছে কাক- আঁকিয়ে চিত্রকর থেকে জীবনমুখী গায়ক। রেলের টাকায় ভাড়া হচ্ছে  নেত্রীর ধামাধরা টিভি চ্যানেলের ওবি ভ্যান, সরকারী অনুষ্ঠান হয়ে উঠছে তৃণমুলের প্রচার সভা। আর পাশাপাশি, অন্ধকারে রয়ে যাচ্ছে সিঙ্গুরের সব হারানো চাষীরা, যাঁদের মুখ থেকে খাবার কেড়ে নিয়ে লুটে পুটে খাচ্ছে কিছু শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী আর প্রতারক মানবাধিকার কর্মীরা। রেল কে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির খেলায়। কেউ কি ভেবে দেখেছেন, যে গরম তো আগেও পড়েছে, এমন ব্যপক বিদ্যুত ছাঁটাই গত কুড়ি বছরে হয়নি কেন? কেন কোল ইন্ডিয়ার মত কেন্দ্রীয় সংস্থা লিখিতভাবে তাদের বাৎসরিক রিপোর্টে দাবি করছে, যে রেল তাদের থেকে কয়লা নিয়ে বিদ্যুতকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে টালবাহানা করছে নিয়মিত, যার ফলে কোল ইন্ডিয়ার কয়লার গুদামে কয়লা রাখার জায়গা নেই, তাএর কয়লা খন বন্ধ করে দিতে হয়েছে? অন্তর্ঘাত করে রাজ্যের বিদ্যুত পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো হচ্ছে, আর তার ফলাফল যে লোডশেডিং, সেই লোডশেডিঙ্গের অন্ধকারে যে তৃণমুল কর্মীটির ছোট্ট মেয়েটাও পড়াশোনা করতে পারছে না, তাঁদেরো কি এ সব ভেবে দেখতে মানা?

এ হেন প্রেক্ষাপটে পৌর নির্বাচন। পৌরসভার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন টিভির ক্যামেরা। 'উন্নয়ন হয়নি', একথা বলতে গিয়ে আমতা আমতা করছেন তৃণমুল স্তরের তৃণমুল/কংগ্রেস কর্মীরাও, নেত্রীর মতো নির্জলা মিথ্যা শিখে উঠতে পারেন নি হয়তো তাঁরাই। নিঃসন্দেহে বেড়েছে নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য, নিঃসন্দেহে বেড়েছে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা। তাই, টিভির চ্যানেল থেকে খালচোর আঁকিয়ের ভাষনে, বিকিয়ে যাওয়া সাংবাদিকের নগ্ন-নির্লজ্জ কলম থেকে শুরু করে  নাট্যকারের বান্ধবীর অশালীন চিৎকারে বারংবার উঠে আসছে ফ্যাসীবাদের পুনর্প্রতিষ্ঠার দাবি।

একটু ভাবুন। কিসের পরিবর্তন চান? কেন চান। বামফ্রন্টের পরিবর্তনে আরো ভালো বিকল্প হতে পারে একটিই, সেটি হল উন্নততর বামফ্রন্ট। কথা বলুন, পৌরপিতার কাজে ভুল থাকলে ধরুন, ধমকে দিন। আরও উন্নয়নের দাবীতে সরব হোন। ওয়ার্ড কমিটি সহ বামফ্রন্টের প্রবর্তিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাগুলিকে আরোও সবল করুন। দেখুন, ভাবুন।

স্বচ্ছতার পক্ষে ভোট দিন। শান্তির পক্ষে ভোট দিন। সবার উন্নয়নের জন্য ভোট দিন।

আপনার ওয়ার্ডে, বামফ্রন্ট প্রার্থীটিকেই ভোট দিন। সুসংহত নাগরিক পরিষেবার ধারা অব্যাহত রাখুন।'

বুধবার, ১২ মে, ২০১০

বিশিষ্টজন ~ অনামিকা

ওঁরা সবাই "বিশিষ্টজন", ইচ্ছে মতন জবাই
করতে পারেন। হুকুম দিলেই মান্য করিস সবাই!
পদ্য লেখেন, নাটক করেন, ওঁরা আঁকেন ছবি।
শবসাধনাও করেন, আছে দুরন্ত ভৈরবী।
চাইলে পরেই ভৈরবী দেয় মৃতদেহের জোগান।
বুদ্ধিবেচা তান্ত্রিকেরা, এ বাংলাকে ভোগান!
মোদীর চেলা হাফ নকশাল, এদের অধিকাংশ
কারণবারির সঙ্গে চিবোয় টাটকা মানুষ-মাংস।
আবার যখন উঠল বেজে নির্বাচনের বাদ্য,
"বিশিষ্টজন" মঞ্চে নামেন যার যে রকম সাধ্য!
একাংশ খুব নাড়ান দাড়ি, করেন হুকুমজারি।
গাঁ'য় মানে না, মোড়ল সাজার সংস্কৃতি-সর্দারি।
অন্যগুলো মুখোসপড়া, বলেন মাথা চুলকে...
লাভের নিমক খেলাম ... তোরা জেতাস তৃণমূলকে!
চেঁচায় নানান রেলকমিটি, চেঁচায় কচিনেতাও ...
অর্ধলক্ষ মাস মাইনে, ভৈরবীকে জেতাও!
আখের গোছায় বিশিষ্টজন। কিন্তু এতক্ষণ যে
অপেক্ষাতে ক্লান্ত বেকার, শহর গ্রামে গঞ্জে ...
হতাশ হয়ে চাইছে হিসেব ... "করলে ন্যানো গায়েব
শিলান্যাসের চাকরি কোথায় বাবু বিবি সায়েব?
আমরা সবাই রাখছি খেয়াল, সমস্ত আর্টস একর।
একসঙ্গেই উপড়ে ফেলব আগাছা আর শেকড়!"

শুক্রবার, ৭ মে, ২০১০

প্রতিরোধের গান ~ অনামিকা

কথা মিশুক সুরে, বাঁচার আশ্বাস থাক গানে,
তিন পৃথিবী আটকে থাকুক ভালবাসার টানে।
পাহাড় নদী ধানের ক্ষেতে সবুজ ঘাসে ঘাসে
চাইছে মানুষ এই ছবিটাই, অজস্র ক্যানভাসে!

হিংসুটে কেউ সেই ছবিতে যখন ঢালে কালি,
মানুষখুনের উসকানিতে ছেটায় গালাগালি,
প্রত্যেকদিন একটা দু'টো তীব্র মৃতদেহ
চিনিয়ে দেয় হিংস্রতাকে, থাকেনা সন্দেহ,
ছদ্মবেশী মানুষখেকো লুকিয়ে রেখে নখ,
বুদ্ধিবিবেক পুঁজির কাছে রেখেছে বন্ধক!
রেলগাড়ীতে মালিক পাঠায় মাসিক মাসোহারা
সন্ত্রাসে দিনরাত্রি জাগে তোমার আমার পাড়া!
দারুণ ব্যথায় ঝলসে ওঠে যুক্তি এবং ক্রোধ
ভয় সরিয়ে জন্ম নিচ্ছে তীব্র প্রতিরোধ।
পুড়ছে মুখোশ, পয়সাখাওয়া খুনী নাটকবাজি।
রক্তমাখা বাংলা এবার শুদ্ধ হতে রাজী ...

বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০১০

সাম্প্রতিক ~ অনামিকা


সারের দাম বেড়ে যাচ্ছে, অমিল হল তন্ডুল
পার্লামেন্ট বেঁচে থাকুক। গণতন্ত্র ভন্ডুল!
সবাই চল আইপিএলএ। চিয়ার ... নাচাগানাতে ...
কোটি টাকাই জানে কেবল কোটি টাকাকে বানাতে।
তাদের পাশে দাড়ানোটাই আজ দেশবাসীর কাজ
ঠিক কতজন অনাহারে? অন্ধকারে সে আন্দাজ!
দাম বেড়েছে। জিনিসপত্র অগ্নিমূল্য! তাতে কী?
বিবি যাবেন শপিং মলে, বাবুর গরম ভাতে ঘি!

অনামিকা ... নিজেই নিজেকে ...

যা লিখছিস অনামিকা, আদৌ তা নয় ঝাঁঝালো।
কী দুর্বিপাক কলমটাকে নিরামিষাশী সাজালো?
কোনও লোভের সমীকরণ হয়ে উঠেছে জোরালো?
আলটপকা বিষাদ আবার ভেতরটাকে পোড়াল?
পুরসভার নির্বাচনে মনোনয়ন জোটেনি?
একটিবারও এসএসসি-তে তোর নামটা ওঠেনি?
মধ্যবিত্ত অপ্রাপ্তির এমনি নানা ধারাতে,
ঘায়েল হয়ে বিক্ষুব্ধ নাম কিনেছিস পাড়াতে!
প্রোমোটারের পদলেহন মেলেনা তোর রুচিতে?
হাঁটিস না তাই মিছিলে আর। যাস না কর্মসূচিতে?
ভুলে গেছিস ওদের দেখে আসিস নি তুই বাঁদিকে।
তুইও যদি ভুল ভাবনায়, তাহলে প্রতিবাদী কে?
মাথার মাঝে হিসেব কষে একশ' লোভ আর হাজার ভয়?
পায়ের নীচের মানচিত্র, তোদের এটা। রাজার নয়!
ঝলসে ওঠ্ কলমে আজ, হিসেবে লাভক্ষতি বাদ!
কাঁদছে প্রতিবেশী মানুষ। জারি রাখিস প্রতিবাদ।

ডিগবাজী ~ অনামিকা

আর তো সুমন দুর্নীতিকে বলছেন না, "তিষ্ঠ"
লোকসভাতে হুইপ মেনেছেন, বড্ড একনিষ্ঠ!
বিষ নেই তার ফনায় শুধু কুলোর পানা চক্কোর ...
এই অপবাদ দিচ্ছে কিছু ফাজিল এবং ফক্কর
দিল্লিতে ভোট দাখিল করেন তৃণমূলের খাতায়
তা নইলে টান পড়বে তো তাঁর সংসদীয় ভাতায়!
কচিনেতার নচিকেতার আকাশছোঁয়া সাহস!
ভক্তবৃন্দ কামড়ে দেবে, চুপটি যদি না হোস।
রেলের ভুয়ো শিলান্যাসে গান গেয়ে পাস টাকা।
জানিস সুমন নিত্য কাঁপায় কলকাতা আর ঢাকা?
সুমন যদি আটলান্টিক, তুই ঘোলাজল দীঘার!
রেলকামরার ভিক্ষুক তুই, সুমনদা' পিট সিগার।
পদত্যাগের পত্র? বারণ মহান মহাশ্বেতার।
নইলে একাই সাধ্য রাখেন যাদবপুরে জেতার!
গান ধরেছেন ভীষ্মলোচন, ভক্তরা বুক বাঁধো।
ভয় কি বলো? ধর্ম আছেন, আছেন পুঁজিবাদও!